ঈদে মিলাদুন্নবী কি - ঈদে মিলাদুন্নবী কেন

আপনারা কি ঈদে মিলাদুন্নবী কি এবং ঈদে মিলাদুন্নবী কেন এ সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আজকের এই পোস্টটি আপনাদের জন্য। আজকে আমরা আলোচনা করব ঈদে মিলাদুন্নবী কি এবং ঈদে মিলাদুন্নবী কেন এই সম্পর্কে।

তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নিন, ঈদে মিলাদুন্নবী কি এবং ঈদে মিলাদুন্নবী কেন এ সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ ঈদে মিলাদুন্নবী কি -ঈদে মিলাদুন্নবী কেন

  • ঈদে মিলাদুন্নবী কি
  • কিভাবে ঈদে মিলাদুন্নবীর উৎপত্তি
  • স্বপক্ষে ঈদে মিলাদুন্নবীর দলিল
  • ঈদে মিলাদুন্নবী তে আমাদের করণীয়
  • শেষ কথাঃ ঈদে মিলাদুন্নবী কি - ঈদে মিলাদুন্নবী কেন

ঈদে মিলাদুন্নবী কি

ঈদে মিলাদুন্নবী হচ্ছে ইসলামএর সর্বশেষ নবী ও রাসূল (সাঃ) এর আগমন উপলক্ষে সকল মুসলমানদের মধ্যে এক আনন্দ উৎসব পালন করা হয়। রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সঃ) জন্মগ্রহণ করেন ১২ই রবিউল আউয়াল মাসে। যদিও অনেকের মাঝে মতবিরোধ আছে এই তারিখ নিয়ে। অনেকেই মনে করেন যে তিনি ৯ই রবিউল আউয়াল মাসে জন্মগ্রহণ করেন। তারপরও প্রায় অনেক জায়গাতেই ঈদে মিলাদুন্নবীর অনুষ্ঠান করা হয় হিজরী ১২ই রবিউল আউয়াল মাসেই। ১২ই রবিউল আউয়াল মাসে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাম জন্মগ্রহণ করেছেন কিনা এইটা নিয়ে প্রায় সবার মাঝেই মতের পার্থক্য থাকলেও তিনি যে মৃত্যুবরণ করেছেন হিজরীর ১২ই রবিউল আউয়াল মাসে বিষয়ে কারও কোন সন্দেহ নেই।

আরো পড়ুনঃ ঘরে প্রবেশ এবং বাহির হওয়ার দোয়া

অর্থাৎ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর একই দিনে জন্ম এবং মৃত্যু দিন। যেহেতু মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর জন্মদিন এবং মৃত্যুদিন একই দিনে, সে ক্ষেত্রে সকল মুসলিম সমাজের জন্য এটা যেমন আনন্দের দিন তেমনি আবার কষ্টের দিন। সে জন্য অনেকেই এই দিনটিতে কোনরকম আনন্দ-উৎসব করেন না এবং অন্যকেও করলেও তাকে বাধা প্রদান করে। আমাদের এই বাংলাদেশ মিলাদুন্নবী হিসেবে এই দিনটাকে বললেও অনেক জায়গাতে বিভিন্ন নামে এই দিনটিকে অভিহিত করা হয়। যেমন পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরা নবী দিবস হিসেবে এই দিনটিকে আখ্যায়িত করেছেন।

কিভাবে ঈদে মিলাদুন্নবীর উৎপত্তি

ঈদে মিলাদুন্নবীর প্রচলন ঘটে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মৃত্যুর অনেক পর থেকে। এই ঈদে মিলাদুন্ন নামে সাহাবীদের সময়ে বা মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর জীবন দশাই ও তেমন কোন কিছু ছিল না। রাসূল (সাঃ) প্রত্যেক সোমবার দিন তিনি রোজা রাখতেন। এই বিষয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তিনি সোমবারের দিন জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং নবুয়ত প্রাপ্ত ও হয়েছেন এই দিনে। সেজন্য তিনি এই দিনে রোজা রেখে শুকরিয়া আদায় করেন।

এই ব্যাপারে তিনি বলেন- " এই দিনে আমার বিলাদত শরীফ হয়েছে, এই দিনে আমি প্রেরিত হয়েছি এবং পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এই দিনে আমার উপর নাযিল হয়েছে"

স্বপক্ষে ঈদে মিলাদুন্নবীর দলিল

ঈদে মিলাদুন্নবী যারা পালন করে থাকে এবং এটাকে যারা সমর্থন করে থাকে তাদের দেওয়া এখন কিছু যুক্তি দেয়া হলো। আল কুরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেন- " আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত প্রার্থীকে খুশি পালনকর্তা তোমাদের সমস্ত ধন-দৌলত অপেক্ষা শ্রেয়।" (সূরা ইউনুস - ৫৮)

আরো পড়ুনঃ আখেরি চাহার সোম্বার দিন যা করতে হবে

এরপর আল্লাহ তাআলা আরেকটি আয়াতে বলেন, " আমি নিশ্চয়ই আপনাকে পুরো বিশ্বের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।"

এক্ষেত্রে বোঝা যায় যে, এই দিনে যেহেতু মহানবী (সাঃ) এর আগমন এবং নবুয়াত প্রাপ্তি হয়েছিলেন তাই চাইলে এই দিনটিকে ঈদ হিসেবে আমরা পালন করতে পারি। আবার এই একই দিনে আমাদের নবী রাসুল (সাঃ) মৃত্যুবরণ করেন। একজন মুসলিম হিসেবে যেদিন আমাদের রাসূল (সাঃ) মৃত্যুবরণ করেন সেই দিনে কিভাবে আনন্দ উৎসব পালন করতে পারবেন? সে ক্ষেত্রে এই দিনে আনন্দের উৎসব এবং মিছিল করা কোনভাবেই সম্ভব না।

তবে আমরা ইচ্ছে করলে নবী রাসুলের জন্মদিন এবং মৃত্যুদিন উপলক্ষে অবশ্যই ইবাদত-বন্দেগী করতে পারি, রোজা রাখতে পারি এবং নবী রাসুলের জীবনী নিয়ে আলোচনা করা যায়। এইসব বিষয়ে কোন সমস্যা ছাড়াই করা যায়। কিন্তু কোন বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করা আমাদের উচিত নয়। কারণ ধর্ম নিয়ে আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাড়াবাড়ি করতে বারণ করেছিলেন।

ঈদে মিলাদুন্নবী তে আমাদের করণীয়

সন্দেহের কোনো অবকাশ নাই ইসলাম ধর্মকে। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি সম্পূর্ণ করতে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহতালা এই সম্পর্কে আল কোরআনে ইরশাদ করেছেন।

" হে কিতাবধারী! নিজেদের ধর্ম নিয়ে অযথা বাড়াবাড়ি করো না। আর তোমাদের আগে যারা নিজেরা পথ ভ্রষ্ট হয়ে এবং অপরকে পথভ্রষ্ট করে সহজ সরল পথ চ্যুত হয়েছে, তাদের পথ অবলম্বন করোনা।" (সূরা মায়েদাঃ ৭৭)

" হে কিতাবধারী রা! তোমরা তোমাদের ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত হয়ো না। আর আল্লাহ সম্বন্ধে যথাযথ বল।"(সূরা নিসাঃ ১৭১)

উপরোক্ত দুটি আয়াতের মধ্যে আল্লাহ তায়ালা আমাদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, ইসলামে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কোনো রকম স্থান নেই। তাই এইসব বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করা আমাদের উচিত নয়। এই বিষয় নিয়ে যেহেতু ইসলাম বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে। আর এটা কোন ধরনের ফরজ বা ওয়াজিব কিংবা সুন্নত কোন ইবাদত নয় বা এটা তেমন কিছু না যা না করলে সকলের গুনাহ হতে পারে সেজন্য এগুলো বিষয়কে এড়িয়ে চলা আমাদের জন্য উত্তম হবে। রাসুল (সাঃ) বিদায় হজের ভাষণে যে ভাষণ সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে দিয়েছিলেন, তিনি সেখানে বলেছিলেন-

" আমি তোমাদের জন্য দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যতদিন আঁকড়ে ধরবে ততদিনই পথভ্রষ্ট হবে না। একটি হচ্ছে আল্লাহর কিতাব এবং অন্যটি আমার সুন্নাহ।" (মিশকাত- ১ম খন্ড হাদিস নম্বর- ১৭৭)

অতএব আমাদের রাসূল (সাঃ) আমাদের জানিয়ে গেছেন যেন আমরা আল্লাহর প্রদত্ত আল-কোরআন এবং রাসূল (সাঃ) এর হাদিস অনুসরণ করে চলি। তাহলেই কখনও আমরা পথ ভ্রষ্ট হইব না। তাই সেটাই আমাদের করা উচিত। সে ক্ষেত্রে কুরআন-হাদিসে যেহেতু এই মিলাদুন্নবী সম্পর্কে কোন প্রকার হুকুম সরাসরি নেই তাই এইসব থেকে আমাদের দূরে থাকা উচিত।

আরো পড়ুনঃ লাইলাতুল কদর কেমন প্রকৃতির রাত

আমাদের ওপর যে সকল হুকুম গুলো কোরআন হাদিসের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে, এগুলোর বাইরে কোন কিছু করলেই ঝামেলায় জড়ানো মনে হয়। একজন প্রকৃত মুসলমান হিসেবে আমাদের উচিত নামাজ রোজা হজ্ব যাকাত সহ সকল ফরজ সুন্নত এবং ওয়াজিব পালন করা। এ ধরনের সকল নফল এবং মুস্তাহাব বিষয় নিয়ে নিজেরা ফেতনা বাঁধানো বোকামি ছাড়া অন্য কিছুনা।

শেষ কথাঃ ঈদে মিলাদুন্নবী কি - ঈদে মিলাদুন্নবী কেন

ঈদে মিলাদুন্নবী কি এবং ঈদে মিলাদুন্নবী কেন এই সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি পড়ুন। ঈদে মিলাদুন্নবী কি এবং ঈদে মিলাদুন্নবী কেন সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন। ঈদে মিলাদুন্নবী কি এবং ঈদে মিলাদুন্নবী কেন এ সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো আর্টিকেলটি ভালভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।

আজ আর নয়, ঈদে মিলাদুন্নবী কি এবং ঈদে মিলাদুন্নবী কেন এই সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই ঈদে মিলাদুন্নবী কি এবং ঈদে মিলাদুন্নবী কেন পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল এ আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url