রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত

আপনারা কি রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত বা রক্ত দেওয়ার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত সে গুলো সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আজকের এই পোস্টটি আপনাদের জন্য। আজকে আমরা আলোচনা করব রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত বা রক্ত দেওয়ার আগে প্রয়োজনীয় নিয়ম গুলো সম্পর্কে।

তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই, রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত সে গুলো সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত

রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত

 জীবন রক্ষার অন্যতম উপায় রক্ত পরিসঞ্চালন কখনো কখনো জটিলতা তৈরি করতে পারে। নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন রক্তগ্রহীতার জন্য যেরকম প্রয়োজন সেরকম রক্তদাতার জন্য ও প্রযোজ্য। সেজন্য রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে কিছু বিষয় সব সময় খেয়াল রাখা উচিত। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডাক্তার সালমা আফরোজ এই ব্যাপারে বলেছেন, একজনের শরীর থেকে অন্য জনের শরীরে রক্তের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের রোগ যেতে পারে।

আরো পড়ুনঃ ব্লাড ক্যান্সার হলে কি হয়

সেজন্য রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নেওয়া জরুরি। জন্ডিস, পালস রেট, এনিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা, শরীরের তাপমাত্রা, রক্তচাপ, ব্লাড সুগার, হিমোগ্লোবিন টেস্ট, ওজন ও ইসিজি সহ সকল ধরনের পরীক্ষাগুলো খুব সাধারণ। ডা. সালমা আফরোজ বলেছেন, রক্ত যারা দেয় তাদের অবশ্যই দেখা লাগবে, যে রক্ত নিবে তার জন্য রক্ত গ্রহণ করাটা অপরিহার্য কি না। অর্থাৎ রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত সেগুলো জেনে রাখা আবশ্যক।

রক্ত দেওয়ার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত

রক্ত দেওয়ার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো-

  • রক্ত দেওয়ার আগের ২৪ ঘণ্টায় মদ্যপান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • কিডনির অসুখ, এপিলেন্সি, ক্যান্সার, হাইপারটেনশন, হার্টের রোগ, এইডস এবং ডায়াবেটিস থাকলে রক্ত দেয়া নিষেধ। যাদের এনিমিয়া আছে তাদেরও রক্ত দেওয়ার নিষেধ।
  • যদি হিমোগ্লোবিন ১২.৫ এর নিচে হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে রক্ত দেয়া যাবে না।
  • যদি পালস রেট ৫০ এর কম এবং ১০০ এর বেশি হয়ে থাকে তাহলে ও রক্ত দেওয়া যাবে না।
  • যদি রক্তদানের আগের ছয় মাসের ভেতরে ট্যাটু বা পিয়ার্সি করানো হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ও রক্ত দেয়া যাবে না।
  • যদি টিবি, হাঁপানি বা কোন ধরনের এলার্জি থেকে থাকে তাহলে ও রক্ত নেওয়া হয় না।
  • রক্তদাতার বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। ওজন কমপক্ষে ৫০ কেজি না হলে রক্ত নেওয়া হয় না। এমনকি রক্ত দেওয়ার সময় দৈহিক তাপমাত্রা ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকতে হবে। রক্তচাপের সিস্টোলিক ১০০ থেকে ১৮০, ডায়াস্টোলিক ৫০ থেকে ১০০ থাকতে হবে।
  • গর্ভবতী কিংবা সদ্য মা হয়েছে এরকম নারী রক্তদান করতে পারবেন না। তাছাড়াও মিসক্যারেজ হবার ৬ মাসের ভেতর রক্তদান করা নিষিদ্ধ।
  • রক্তদাতার কোন ধরনের ছোঁয়াচে বা রক্ত দ্বারা বাহিত হতে পারে এরকম কোন অসুখ থাকলে সে ব্যক্তি রক্ত দিতে পারবে না।

রক্ত দেওয়ার আগে প্রয়োজনীয় নিয়ম

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মানুসারে, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী সকল মানুষই নিজ ইচ্ছায় রক্ত দিতে পারবেন। তবে কিছু শর্তাবলী আছে যার কারণে নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেজন্য রক্ত দান করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিয়ম জানা জরুরী। রক্তে থাকে প্লেটলেট, রক্ত কণিকা ও প্লাজমা। চিকিৎসকরা জানাই, এই তিনটা জিনিসই এক ইউনিট রক্ত থেকে ব্যবহার করা যায়। অর্থাৎ বলা যেতে পারে, কমপক্ষে তিনজন মানুষের জীবন এক ইউনিট রক্ত রক্ষা করতে পারে। চাইলে কোন রক্তদাতা হোল ব্লাড বা সমগ্র রক্ত ও দিতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ রক্ত দিলে কি রোজা ভেঙ্গে যায় কি না জেনে নিন বিস্তারিত

কিংবা রক্তের বিশেষ উপাদান অর্থাৎ প্লেটলেট ও দান করতে পারবেন। মানব দেহের মোট ওজনের শতকরা সাত ভাগ থাকে রক্ত। সাধারণত একজনের দেহ থেকে একবারে এক ইউনিট করে রক্ত নেয়া হয়ে থাকে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই রক্তদাতার দেহে পুনরায় তৈরি হয়ে যায়। শুধু এটাই নয়, এর ফলে রক্তদাতার কোন ধরনের ক্ষতি হয় না। তবে চাইলেই যে কেউ রক্ত দিতে পারবে না। এছাড়াও যদি রক্তের গ্রুপ ভুল হয়ে যায় তাহলে শারীরিক গুরুতর সমস্যা থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। তাই রক্ত দেওয়ার আগে কি কি নিয়ম মানতে হবে সেগুলো জেনে নেয়া আবশ্যক।

রক্ত দেওয়ার পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত

রক্ত দেওয়ার পরে যে বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদের খেয়াল রাখা উচিত সেগুলো বিষয়ে আজকে আমরা আলোচনা করব।

  • রক্ত দেওয়ার পরে যে স্ট্রিপ বা ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দেওয়া হয় সেটা অন্তত কয়েক ঘণ্টা রাখুন।
  • রক্ত দেওয়ার পরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
  • ত্বকের র‍্যাশ এড়ানোর জন্য ব্যান্ডেজ খোলার পরে সাবান পানি দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
  • রক্ত দেওয়ার পর সেইদিন ভারী কোন কিছু তুলবেন না কিংবা এক্সারসাইজ না করাটাই ভালো।
  • সুচ ফোটানো জায়গা থেকে যদি রক্তপাত হতে থাকে, সে ক্ষেত্রে ক্ষতের উপরে চাপ দিয়ে ১০-১৫ মিনিট হাত সোজা করে উপরে তুলে রাখুন। যতক্ষণ পর্যন্ত রক্তপাত বন্ধ না হচ্ছে।
  • রক্ত দেওয়ার পরে মাথা ঘুরলে কিংবা কোনো রকম শারীরিক অসুস্থ হলে কিছুক্ষণ বসে থাকুন অথবা শুয়ে থাকুন, যতক্ষণ পর্যন্ত সুস্থতা বোধ না করবেন।

শেষ কথাঃ রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত

রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত বা রক্ত দেওয়ার পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত সে গুলো সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত সে গুলো সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।

আজ আর নয়, রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত সে গুলো সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই রক্ত দেওয়ার আগে ও পরে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত সে গুলো সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url