বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ
সূচিপত্রঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ
- বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ
- এক গম্বুজ মসজিদ ভ্রমণ
- এক গম্বুজ মসজিদ কোথায়
- এক গম্বুজ মসজিদের বিবরণ
- এক গম্বুজ মসজিদ এর ইতিহাস
- শেষ কথাঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ এর হচ্ছে রণ বিজয়পুর মসজিদ। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ টি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত। বাগেরহাট জেলা সদর থেকে এক গম্বুজ মসজিদটি পশ্চিম দিকে প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার এবং ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকে ১.৫০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব দিকে অবস্থিত। ষাট গম্বুজ ইউনিয়নের রণ বিজয়পুর গ্রামে এই এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি হওয়ার কারণে রণবিজয়কর মসজিদ নামেও এই মসজিদটি পরিচিত ছিল।
অনেকের মতেই মসজিদটির আদি নাম হচ্ছে দরিয়া খাঁর মসজিদ। এই দরিয়া খাঁ ছিলেন হযরত খান জাহান আলীর সহচর। হযরত খানজাহান আলীর সময়কালে (১৪৫৯) অনুসারে নির্মিত সাল ধারনা করা হয়ে থাকে। রণ বিজয়পুর মসজিদে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গম্বুজ অবস্থিত। মসজিদের দেয়ালগুলো ইটের তৈরি বেশ পুরু। পশ্চিম দিকের দেয়াল ছাড়া বাকি তিনটা দেয়ালের প্রত্যেকটিতে তিনটা করে দরজা রয়েছে। তিনটা মেহরাব পশ্চিম দেয়ালে রয়েছে। অন্য দুটি মেহরাবের থেকে বড়।
আরও পড়ুনঃ রমজানের প্রথম ১০ দিনের আমল
মসজিদের আয়তন বাইরে থেকে ৫৬ বর্গফুট এবং ৩৬ বর্গফুট ভেতরের দিকে। ১০ ফুটের মতো চওড়া মসজিদের প্রাচীর। মসজিদের কার্নিশ গুলো সামান্য বাঁকানো এবং কার্নিশের ওপর পর্যন্ত চার কোনার বাইরের বুরুজ বিস্তৃত। এই মসজিদে আছে ১১ মিটারের বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গম্বুজ। মূল মেহরাবে রয়েছে ফুলের নকশা করা। মসজিদের উত্তর পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে তিনটা প্রবেশদ্বার রয়েছে। এবং এর দেয়ালে পোড়ামাটির তিনটি অলংকরণ করা রয়েছে। খানজাহানের স্থাপত্য শৈলী অনুসরণ করে এই মসজিদটা নির্মাণ করা হয়।
এক গম্বুজ মসজিদ ভ্রমণ
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ ভ্রমণ করার জন্য অনেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসেন। অনেকে আবার বুঝতে পারেন না কিভাবে এই মসজিদে পৌঁছাবে। সেক্ষেত্রে তাদের জন্য আমাদের আজকের এই পোস্টটা। সচরাচর ঢাকা সবাই চিনে বা আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে ঢাকা পর্যন্ত আসলে ঢাকার সায়েদাবাদ এবং গাবতলী থেকে সরাসরি বাগেরহাট যাবার জন্য বাস পাওয়া যায়। এছাড়াও কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেনে করে খুলনা হয়ে বাগেরহাটে যেতে পারবে। আবার সদরঘাট হতে স্টিমারে করে মোড়লগঞ্জে নামার পর সেখান থেকে বাগেরহাট এক গম্বুজ মসজিদ চলে যেতে পারবে।
আরো পড়ুনঃ রোজার ইবাদতের ফজিলত
ঢাকার গাবতলী থেকে হানিফ, সোহাগ, ঈগল পরিবহনের গাড়ি ছেড়ে যায়। সেখান থেকে ভাড়া নিবে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। যাতায়াতে প্রায় সাত ঘন্টা মত সময় লাগে। আবার প্রতিদিন সকাল ছয়টা থেকে দশটা পর্যন্ত এবং সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত ঢাকা সায়দাবাদ থেকে অনেকগুলো গাড়ি ছেড়ে যায়। আপনারা প্রথমে সুন্দরবন এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনে করে খুলনায় গিয়ে বাস ধরে তারপর বাগেরহাটে যেতে পারবেন। রূপসা থেকে বাগেরহাটে যেতে চল্লিশ মিনিট সময় লাগতে পারে।
এক গম্বুজ মসজিদ কোথায়
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদটি বাগেরহাট জেলার শহর থেকে দক্ষিণ পশ্চিমে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে এবং ৬০ গম্বুজ মসজিদ থেকে প্রায় ২.৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত। এই মসজিদের উত্তর পাশে খঞ্জালী দিঘী বা খান জাহান দিঘী (ঠাকুরদিঘী) অবস্থিত। খান জাহানের সমাধি কমপ্লেক্সের বা দরগাহ কমপ্লেক্সের অন্যতম একটা স্থাপনা হচ্ছে এক গম্বুজ মসজিদ। কমপ্লেক্সের সর্ব পশ্চিমে এটা অবস্থিত। খানজাহান আলীর মাজার এর পাশেই অবস্থিত। খান জাহান আলীর রান্নাঘর এবং খানজাহান আলীর প্রধান সেনাপতি পীর তাহির আলীর মাজার।
এক গম্বুজ মসজিদের বিবরণ
এক গম্বুজ মসজিদ হচ্ছে একটা বর্গাকার মসজিদ। মসজিদ তৈরির প্রধান উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ইট। মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করার জন্য তিনটা খিলানপথ বা দরজা রয়েছে। যা উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে অবস্থান করে। বর্তমানে উত্তর ও দক্ষিণের খিলানপথ গুলো এর মধ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে। মসজিদে একটা মেহরাব রয়েছে।
মসজিদের পূর্ব দিকে খিলানপথ বরাবর মীরাবের অবস্থান এবং এটা হচ্ছে অর্ধাবৃত্তাকার। বক্রাকার কার্নিশ রয়েছে মসজিদের বাহিরে চারপাশে এবং গোলাকার কর্নার টাওয়ার রয়েছে চারটা। প্রায় বেশিরভাগ অংশজুড়ে বর্গাকার কক্ষের উপর ভাগের রয়েছে ইটের তৈরি একটা গোলার্ধ আকৃতির গম্বুজ।
এক গম্বুজ মসজিদ এর ইতিহাস
এই এক গম্বুজ মসজিদ এর ইতিহাস এবং নির্মাণ কৌশল খেয়াল করলে দেখা যায় যে, এটা খানজাহান আলীর সমাধির অনুরুপ। সেজন্য মসজিদ ও সমাধি উভয়ের স্থাপনা তৈরীর সময়কাল ধরা হয় কাছাকাছি। যে লিপি খানজাহান আলীর সমাধি থেকে পাওয়া গেছে সেই হিসেবে অনুসারে অক্টোবরের ২৫ তারিখ ১৪৫৯ খ্রিষ্টাব্দ (জিলহজ ৮৬৩ হিজরিতে) মৃত্যু বরণ করেছিলেন তিনি। এই সমাধি ধারণা করা হয়ে থাকে মৃত্যুর আগেই তিনি নির্মাণ করেছিলেন। এই স্থাপনার বয়স সেই হিসেবে ৫০০ বছরেরও বেশি।
আরো পড়ুনঃ রমজানের রোজার ফজিলত
দিল্লি তুগলক স্থাপত্যের সাথে একে অনেকেই তুলনা করেছেন। চতুর্দিকে গোলাকৃতি কর্নার টাওয়ার, খিলানের অবস্থান এবং এর সাথে স্বরদলের সাবলীল সমন্বয় এর কারণ। বাংলা বিজয়ের সময় ফিরোজ শাহ তুগলকের আমলে অনেক কারিগর এখানে বসতি স্থাপন করেছিলেন। এছাড়া ও ১৩৯৯ সালে তৈমুর লং দিল্লি আক্রমণ করলে অনেকেই দেশ ত্যাগ করে কিংবা বিতাড়িত হয়ে বাংলায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। ধারণা করা হয়ে থাকে তুগলক স্থাপত্য তাদের মাধ্যমেই এখানে পরিচিত পায়। যার অন্যতম দৃষ্টান্ত হচ্ছে এই মসজিদ।
শেষ কথাঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোষ্টটি পড়ুন। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
আজ আর নয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ মসজিদ সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬
