বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায়
আপনারা কি বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায় বা বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার দোয়া ও পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আজকের এই পোস্টটি আপনাদের জন্য। আজকে আমরা আলোচনা করব ৩ বছরের বাচ্চাদের পড়াশোনা, পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় বা বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায় সম্পর্কে।
সূচিপত্রঃ বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায়
- বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায়
- পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায়
- পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়
- পড়াশোনায় মন বসানোর ৫টি উপায়
- চঞ্চল বাচ্চাকে শান্ত করার উপায়
- শেষ কথাঃ বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায়
বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায়
পড়াশোনায় কি আপনার বাচ্চা অমনোযোগী? কিছু কৌশল অবলম্বন করলে আপনার বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায় পেয়ে যাবেন। তখন তারা পড়াশোনা করবে নিজে থেকেই এবং উন্নত হতে ব্রেনকে সাহায্য করবে। আমাদের দেশে নিজে থেকে পড়াশোনা করতে চাই না এমন বাচ্চা অনেক রয়েছে। বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার জন্য অনেক অভিভাবক তার বাচ্চাদের অনেক শাসন করে থাকেন। তারপরও কোন ভাবে তাদের বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায় খুঁজে পাই না বা মনোযোগী করতে পারে না।
তবে বাচ্চাদেরকে পড়াশোনায় মনোযোগী করবার জন্য অতিরিক্ত শাসন না করাটাই উত্তম হবে। বাচ্চাদেরকে পড়াশোনায় মনোযোগী করবার জন্য বেশ কিছু কৌশল রয়েছেন যেগুলো অবলম্বন করলে বাচ্চারা নিজে থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী হবে। তাই বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায় গুলো নিয়ে আমাদের আজকের এই পোস্টটা। আপনার শিশুর বয়স যখন তিন বছর হবে তখন থেকেই আপনার বাচ্চাকে একটু একটু করে খেলার ছলে পড়া শেখান, ছড়া বলার অভ্যাস করুন। ছয় বছর হলে অবশ্যই শিশুকে স্কুলে ভর্তি করা আপনার উচিত।
আরো পড়ুনঃ পা ফাটা দূর করার ক্রিম বাংলাদেশ
প্রতিদিন তাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া এবং স্কুল থেকে নিয়ে আসার অভ্যাস করান। অনেক অভিভাবক বলে থাকেন যে তাদের বাচ্চার নাকি পড়াশোনায় একদমই মনোযোগ নাই। সেসব অভিভাবকদের জানা উচিত যে এই সময় শিশু দুষ্টুমি, খেলাধুলা ইত্যাদি করতেই বেশি পছন্দ করেন। তাই এগুলোর মধ্য দিয়েই শিশুকে পড়াশোনা শেখাতে হবে। বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায় রয়েছে যে উপায় গুলো অভিভাবকদের জানতে হবে। তাহলেই আপনারা বাচ্চাদেরকে পড়াশোনায় মনোযোগী করতে পারবেন।
পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায়| বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার দোয়া
পড়াশোনার আসল নিয়মটা আমরা অনেকেই জানিনা। বই পড়ার আসল উদ্দেশ্য টা যে কি সেটা আসলে আমরা অনেকেই অবগত না। বই পড়ার আসল মানে হল জ্ঞান অর্জন করা। কিন্তু আমাদের সে বিষয়ে কোনো রকম আগ্রহ নেই। আমরা যে বই পড়ার মাধ্যমে আনন্দ পেতে পারি আমাদের কাছে এই কথাগুলো খুবই আশ্চর্যজনক মনে হয়। পড়তে বসলে আমাদের শুধুমাত্র একটাই উদ্দেশ্য থাকে যে, আমরা পড়া কিভাবে মুখস্ত করব। যার কারনে আমরা শুধু মুখস্ত করতে চেষ্টা করে থাকি। তাড়াতাড়ি করে মুখস্থ করতে চেয়ে থাকি।
মহান আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে ওহি আসার পরে তাড়াহুড়ো করে তা মুখস্থ করার বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। বরং উপদেশ দিয়েছিলেন ধীর স্থিরতা অবলম্বনের জন্য। সুতরাং মহান আল্লাহ রাসুল (সাঃ) কে দেওয়া এই উপদেশের মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয় যে তাড়াহুড়ো করে আমাদের পড়াশোনার করা যাবে না। ধীরে ধীরে বুঝেশুনে আয়স্থ করে একটা পড়া পড়তে হবে। অনেকের বাচ্চা পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়ায় তারা বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার দোয়া শিখিয়ে থাকে। এ দোয়াটি পড়লে বাঁচার পড়াশোনায় মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং পড়া মনে থাকবে। দোয়াটি হচ্ছে-
দোয়াঃ ربي زدني علما
বাংলা উচ্চারণঃ "রাব্বি যিদনি ইলমা"
উপরোক্ত দোয়াটি নিয়মিত পাঠ করলে বাচ্চাদের মুখস্ত শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে থাকবে ইনশাআল্লাহ। এবং পড়াশোনায় বাচ্চাদের মনোযোগ বৃদ্ধি করবে। পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায় হিসেবে এটা অনেক বেশি পরিচিতি লাভ করে।
পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়
আপনার বাচ্চার পড়ার মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে জানতে চান? চলুন আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে খুব সহজ উপায়ে আপনার বাচ্চার পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধি করতে পারবেন। পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় গুলো নিম্নে দেয়া হলো-
- বাচ্চাদের পড়াশোনা করার রুটিন তৈরি করে দিন।
- সহজ বিষয় দিয়ে পড়া শুরু করুন।
- বাচ্চাদের কে শুধুমাত্র বইয়ের ভেতরেই সীমাবদ্ধ না রাখা।
- পড়াশোনা করার জন্য সঠিক স্থান বাছাই করুন
- বাচ্চাদের পড়াশোনায় উৎসাহ ও প্রশংসা করুন।
- পড়াশোনার সময় নির্ধারণ করুন।
- বাচ্চাকে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলার সময় দিন।
- বাচ্চার পাশে বসে বই পড়ার অভ্যাস করুন।
- বাচ্চার পড়া শেষ করে তাকে পছন্দের খাবার দিন।
- বাচ্চাকে নিয়মিত স্কুলে যাবার অভ্যাস করুন।
- বাচ্চাকে মাঝে মধ্যে ঘুরতে নিয়ে যান।
- বাচ্চাদের মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন।
- পরিবারের সকলে এগিয়ে আসুন।
- অন্যান্য বিষয়গুলোতে ছাড় দেওয়া।
- বিভিন্ন মাধ্যমে একত্রিত করা।
- শিশুদের কথা বলার সুযোগ দিন।
- শিশুর জ্ঞান বৃদ্ধির দোয়া শিখিয়ে দিন।
পড়াশোনায় মন বসানোর ৫টি উপায়| ৩ বছরের বাচ্চাদের পড়াশোনা
একটা বাচ্চা বড় হলে কেমন হবে সেটার ভিত্তি তৈরি করার জন্য তিন থেকে ছয় বছর বয়স পর্যন্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়। একটা পরিবার এ সময়ে কিভাবে শিশুকে গড়ে তুলছে, কি শিখাচ্ছে সেটার উপর নির্ভর করে বড় হয়ে তার স্বভাব, বুদ্ধিমত্তা, আত্মবিশ্বাস, আচরণ, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি কি রকম হবে সেটা। তিন থেকে ছয় বছর এ বয়স টুকুর মধ্যেই সাধারণত একটা শিশুর ব্যক্তিত্বের মূল ভিত্তি গঠন হয়ে থাকে। পরবর্তী সময়ে সমাজ এবং শিক্ষা তাকে গড়ার চেষ্টা করলেও সাধারণত এ বয়সে তৈরি হওয়া মূল ভিত্তিগুলো পরিবর্তন সম্ভব হয় না।
সে ক্ষেত্রে ৩ বছরের বাচ্চাদের পড়াশোনা খেলার ছলেই শুরু করে দেয়া উচিত। এ সময় তারা আস্তে আস্তে অনেক কিছুই শিখে ফেলে। বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায়গুলো অবলম্বন করে আস্তে আস্তে বাচ্চাকে পড়াশোনার দিকে নিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও পড়াশোনায় মন বসানোর ৫টি উপায় আপনাদের সামনে আলোচনা করছি। আপনার বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করে গড়ে তোলার জন্য উল্লেখিত কিছু পরামর্শ দেয়া হলো।
- বাবা মার দায়িত্বঃ বাচ্চাদের সাথে কথা বলা এবং তাদের কথাগুলো মন দিয়ে শোনা। বাচ্চাদের কথা বাবা-মা মন দিয়ে শুনলে সম্ভবতই বাচ্চাদের অতিরিক্ত ছটফটে ভাব কমে আসে। বাচ্চাদের হোমওয়ার্ক বাচ্চাদেরকেই করতে দেয়া উচিত। নিজেরা কখনোই স্কুলে বকুনি খাবার ভয়ে করে দেবেন না। এতে করে বাচ্চা পড়াশোনার গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝতে পারবে। বাচ্চাদের সামনে কোন ধরনের টেনশন করা উচিত নয়, এতে করে বাচ্চা আতঙ্কে ভুগে থাকে।
- অংকের কেরামতিঃ বাচ্চার সাধারণত ৬ বছর বয়স থেকেই খেলাধুলার পাশাপাশি প্রতিদিন নিয়ম করে অংক করার অভ্যাস করতে হবে। অংক মানেই শুধুমাত্র সিলেবাসের ভেতরে বাধা গতের অংক না। সিলেবাসের বাইরে ও অংক কষার অভ্যাস গড়তে হবে, অনেকটা ধাধার সমাধান কিংবা নামতার অনুরূপ। বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায় হতে পারে অংকই তুরূপের তাস।
- ছোট ছোট নির্দেশঃ বাচ্চাকে লেখার সময় ছোট ছোট নির্দেশগুলো দিতে হবে। তিনটা দিয়ে প্রথমে শুরু করতে হবে। যেমন, ছবি আঁকার সময় রং দিয়ে আউটলাইন গুলো টেনে দাও, পয়েন্টগুলো কে জুড়ে দাও, ভেতরটা ভালো করে রং করো। এরকম ভাবে নির্দেশের সংখ্যা আস্তে আস্তে বাড়াতে থাকুন। তবে খেয়াল রাখবেন যে বাচ্চা কতটুকু মনে রাখতে পারছে। বাড়িতে নির্দেশ অনুযায়ী ঠিকঠাক ভাবে কাজ করার অভ্যাস হলে স্কুলের শিক্ষকদের নির্দেশ গুলো মানার ক্ষেত্রে কোন ধরনের সমস্যা হতে পারে না।
- মিউজিকে মন বসেঃ বাচ্চাদের মিউজিক ইন্সট্রুমেন্টে ছোট থেকেই তালিম দিতে পারেন। কন্সেন্ট্রেশন লেভেল অনেকটাই বেড়ে যায় নোট ধরে সুর তোলার মধ্য দিয়ে।
- ঘাম ঝরুকঃ অন্তত এক ঘণ্টা করে প্রতিদিন ছুটাছুটি খেলার জন্য বরাদ্দ করে রাখতে হবে। এতে শরীর থেকে ঘাম ঝরবে। যার ফলে শরীরে এন্ডরফিন প্রচুর পরিমাণে নিঃসৃত হয়ে যায়। বাচ্চাকে এরপরেই পড়াতে বসালে প্রথম ঘন্টাখানেক পড়ার প্রতি তার পুরোপুরি মনোযোগ থাকবে।
চঞ্চল বাচ্চাকে শান্ত করার উপায়
প্রত্যেক বাচ্চার তার বাবা মার কাছে খুব আদরের। কিন্তু সে বাচ্চা যদি চঞ্চল কিংবা অবাধ্য হয়ে থাকে তাহলে বাবা মার কষ্টের শেষ থাকে না। তাই কিছু বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী বাচ্চাকে মানুষের মত মানুষ করতে চাইলে ছোট থেকেই উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলে সে একজন দায়িত্ববান ব্যক্তি হিসেবে বড় হবেন। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে চঞ্চল বাচ্চাকে শান্ত করার উপায় বা শান্ত করা সম্ভব। তাহলে চলুন দেখে আসি একটা চঞ্চল বাচ্চাকে শান্ত করার উপায়।
চঞ্চল বাচ্চাকে শান্ত করার উপায় হচ্ছে তার সাথে অন্য কারোর তুলনা করা যাবে না কিংবা তাকে কারো সামনে অপমানিত করা যাবে না। এতে করে বাবা মায়ের প্রতি সন্তানের শ্রদ্ধা হারানোর সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে অভিভাবকের এরকম যদি কোন স্বভাব থেকে থাকে তাহলে সেটা বদলে নেয়ায় শ্রেয় হবে। তা না হলে সন্তান আরো বেশি অবাধ্য হয়ে উঠতে পারে। বাচ্চার সাথে বারবার একই কথা বলা যাবে না। বারবার একটা কথা বললে সেটার গুরুত্ব কমে যায়। সে ক্ষেত্রে একবার বলাই ভালো হবে। একবারে না শুনলে তখন তাকে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে, সেক্ষেত্রে কঠোরভাবে কোন শাস্তি নয়। চঞ্চল বাচ্চাকে শান্ত করার উপায় হিসেবে এটা ভাবা যেতে পারে।
শেষ কথাঃ বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায়
বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায় সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোষ্টটি পড়ুন। বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায় সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন। বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায় সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
আজ আর নয়, বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায় সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই বাচ্চাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করার উপায় সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬
