ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়?

  

ভিডিও কনটেন্ট এর জনপ্রিয়তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইউটিউব এর জনপ্রিয়তা। ইউটিউব থেকে আয় করার ব্যাপারটি বর্তমানে কারোরই অজানা নয়। তবে ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় তার একাধিক উপায় রয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় তার উপায় বা কিভাবে ইউটিউব থেকে ইনকাম করবেন।

আপনার ইউটিউব চ্যানেল যদি ছোট হয় এবং ইউটিউবই আপনার একমাত্র কাজ ও আয় এর উৎস হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে ফুলটাইম ইউটিউবিং আপনার জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। ছোট কনটেন্ট ক্রিয়েটর যারা ইউটিউব থেকে অন্য উপায়ে যথেষ্ট পরিমাণ আয় করতে পারে না, তারা সরাসরি সাবস্ক্রাইবারদের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নিতে পারে। 

সূচিপত্রঃ ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়? 

ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়?  

অনেকে মনে করেন শুধুমাত্র এডসেন্স মনিটাইজেশন এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে টাকা আয় সম্ভব। তবে এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ইউটিউব থেকে আয় এর একাধিক উপায় রয়েছে।

ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার একমাত্র উপায় হলো নিজের ইউটিউব একাউন্ট বা চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করা। নিজের ইউটিউব চ্যানেল বানিয়ে তাতে ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আর, কেবল এক-দুই টাকা নয়, লোকেরা ইউটিউবে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করছেন। 

ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম থেকে আয়

ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে শুধুমাত্র এডসেন্স নিয়ে টাকা আয় করা যায় তা কিন্তু নয়, এর পাশাপাশি আরো অনেক সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়, ইউটিউব পার্টনার প্রগ্রামে যুক্ত হয়। ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে ইউটিউব প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন ফিস, সুপার চ্যাট, মেম্বারশিপ প্রোগ্রাম ইত্যাদি সুবিধা পাওয়া যায়। 

আরো পড়ুনঃ ইউটিউব থেকে আয় করার উপায় 

ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত হতে আপনার দরকার হবে একটি ইউটিউব চ্যানেলের। ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম জানতে এখানে ক্লিক করুন। ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত হতে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে গত ১২ মাসে ১,০০০ সাবস্ক্রাইবার, ৪,০০০ ঘন্টা ভিউ ওয়াচ টাইম থাকতে হবে। এছাড়াও ইউটিউব চ্যানেলে কোন প্রকার কপিরাইট স্ট্রাইক থাকা যাবেনা।

ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম চ্যানেলের ব্যাপারটি মনিটাইজেশন নামে পরিচিত। আপনার ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন এর জন্য উপযুক্ত কিনা তা জানতেঃ

  • ইউটিউব স্টুডিও তে প্রবেশ করুন
  • বামপাশের মেনু থেকে মন নিয়ে Monetisation  এ ক্লিক করুন 
  • এরপর আপনার চ্যানেলের মনিটাইজেশন এলজিবিটি স্ট্যাটাস দেখতে পাবেন।
  • আপনার চ্যানেল মনিটাইজেশন এর জন্য উপযুক্ত হলে apply now বাটন দেখতে পাবেন। 
  • আপনার চ্যানেল মনিটাইজেশন এর জন্য এখনো উপযুক্ত না হলে এমন কিছু প্রদর্শিত হবে।

আপনার ইউটিউব চ্যানেল যদি ইউটিউব এর অফিশিয়াল অ্যাডসেন্সে একাউন্ট কে সমর্থন করে, সেক্ষেত্রে আপনি অ্যাডসেন্স একাউন্ট এর অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন এর ক্ষেত্রে কিছু গাইড লাইন রয়েছে। যেমনঃ

  • এড রেভিনিউঃ ইউটিউব ভিডিও এর এড রেভিনিউ পেতে হলে আপনার ভিডিও অ্যাডভারটাইজার ফ্রেন্ডলি হতে হবে, যাতে বিজ্ঞাপন দাতারা আপনার ভিডিওতে এড শো করতে রাজি হয়। এছাড়াও এড রেভিনিউ পেতে গেলে অবশ্যই আপনার বয়স 18 বছর বা তার বেশি হতে হবে।
  • ইউটিউব প্রিমিয়াম রেভিনিউঃ কোন ইউটিউব প্রিমিয়াম মেম্বার যদি আপনার ইউটিউব ভিডিও দেখে, সে ক্ষেত্রে আপনি ওই ভিউয়ার এর সাবস্ক্রিপশন এর কিছু অংশ রেভিনিউ হিসেবে পাবেন। 
  • চ্যানেল মেম্বারশিপঃ চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার দের কাছে মেম্বারশিপ সেল করতে হলে মিনিমাম ৩০ হাজার সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে। 
  • সুপার চ্যাটঃ লাইভ স্ট্রিম এর সময় চ্যাটে ভিউয়াররা যে অর্থ প্রদান করে সেটাকে সুপার চ্যাট বলে। তবে বাংলাদেশে সুপার চ্যাট ফিচারটি নেই।
 উপরোক্ত নীতিমালা অনুসরণ করে ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত হয়ে ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় তা জানতে পারবেন।

বিভিন্ন প্রোডাক্ট বিক্রির মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আয়

ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় এটা নিয়ে যারা ভাবছেন, তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট। বর্তমানে বিভিন্ন প্রোডাক্ট বিক্রি ইউটিউবার ও পাবলিক দের আয়ের অন্যতম উৎস হয়ে উঠেছে। আপনার ইউটিউব চ্যানেলে যদি যথেষ্ট পরিমাণ ফ্যান ফলোয়ার থাকে, তারা আপনার ভিডিও দেখে সেখান থেকেও পন্য কিনে নিতে পারে।
আপনার ইউটিউব চ্যানেল ও যেহেতু একটি ব্র্যান্ড, সেক্ষেত্রে বিক্রি হওয়া মার্চেন্ডাইজ এ নিজস্বতা রাখার চেষ্টা করুন। যার ফলে চ্যানেল হিসেবে আপনার প্রমোশন হবে ফ্রিতেই।
এছাড়াও আপনি ভিউয়ার দের সাথে পণ্য নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। এর ফলে খুব সহজেই পণ্য বিক্রি করা যাবে। মার্চেন্ডাইজ বিক্রি করতে পারেন অনলাইন শপ বা ফেসবুক পেজে ও।

ইউটিউবে ভিডিও এডিটিং সার্ভিস দিয়ে আয়

যেহেতু আপনি ইউটিউব এ ভিডিও আপলোড করবেন, সেহেতু আপনাকে ভিডিও এডিটিং এ পারদর্শী থাকতে হবে। আপনি যদি মনে করেন আপনি ভিডিও এডিটিং এ অন্যদের চেয়ে ভালো, এবং আপনি এই কাজে পারদর্শী। সেক্ষেত্রে আপনি ভিডিও এডিটিং সার্ভিসটি প্রদান করতে পারেন।
অন্য ইউটিউবারদের কাছে ভিডিও এডিটিং সার্ভিস প্রদান করেও আয় করতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন ফ্রিল্যাসিং প্লাটফর্মে ও ভিডিও এডিটিং করে আয় করা যায়। ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় এটা নিয়ে যারা ভাবতেন আশা করছি তারা বুঝতে পেরেছেন। ভিডিও এডিটিং অত্যন্ত ডিমান্ডিং একটি সার্ভিস। তাই এই বিষয়ে পারদর্শিতা থাকলে, ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় নিয়ে যারা ভাবতেন, তাদের সাহায্য করে আয় করতে পারেন। 

অনলাইন কোর্স বিক্রির মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আয় 

আপনার যদি কোন শিক্ষামূলক ইউটিউব চ্যানেল থেকে থাকে তাহলে আপনি যা শেখান তার চাইতে ভালো টা দিয়ে বানাতে পারেন অনলাইন কোর্স। এছাড়া ও আপনার ভিডিও এর কোনো নির্দিষ্ট ব্যাপার যদি ভিউয়াররা শিখতে ইচ্ছুক হয়, সেক্ষেত্রে অনলাইন কোর্স সেল করা হতে পারে আপনার ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় তার একটি উৎস।

শেষ কথাঃ ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়

আপনি যদি ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় এর উপায় পেতে চান তাহলে পুরো পোস্টটি পড়ুন। ইউটিউব থেকে কিভাবে আয় করা যায় এর উপায় গুলো এবং কিভাবে কাজ করবেন তার সমস্ত কিছু বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে আপনাকে পুরো আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়তে হবে। আপনি পুরো আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়লে আশা করছি ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় এর সবকিছু একদম সাধারণ ভাষায় বুঝে নিতে পারবেন। 

আজ আর নয়, ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় এই বিষয়ে আপনার যদি কোন কিছু জানার থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করছি আমরা সেখানে আপনার উত্তর দিয়ে দিবো। আমাদের আজকের এই ইউটিউব থেকে  কিভাবে টাকা আয় করা যায় পোস্ট টি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। 
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url